আশা করি ভাল আছেন । টাইটেল দেখেই বুঝতে পারছেন এটি কিসের টিউন এবং কাদের
জন্য । । কেউ ঐ টিউনগুলো
পড়ে কোনো অংশ বুঝতে না পারলে আমার এই টিউন পড়ে যদি বুঝতে পারে তাহলেই আমার
টিউনের স্বার্থকতা এবং আবার একই টপিক নিয়ে টিউন করার উদ্দেশ্যও সেটিই ।
তাহলে শুরু করি ।
ব্লগিং করি অথচ গুগল এডসেন্সকে চিনিনা এমন লোক খুব কমই আছে । কিন্তু যারা ব্লগিং-এ নতুন তাদের জন্য এটি না চেনাই স্বাভাবিক । আবার অনেকে গুগল এডসেন্সের জন্যই ব্লগিং করেন । তো যাই হোক, আমার এই পোস্ট গুগল এডসেন্স নিয়ে এবং যারা এটি একেবারেই চিনেননা তাদের জন্য । অল্প কথায় সহজে বুঝতে চাইলে মনযোগ সহকারে পড়ুনঃ
১। গুগল এডসেন্স কী?
গুগল এডসেন্সবিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল এর একটি সেবা হল এডসেন্স । এই সেবাটির মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা টাকার বিনিময়ে তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন এবং পাবলিশাররা বিজ্ঞাপনদাতাদের বিজ্ঞাপন নিজ নিজ ব্লগ বা ওয়েবসাইটে দেখিয়ে টাকা উপার্জন করে থাকেন । (বিজ্ঞাপনদাতা এবং পাবলিশার কী বা কারা জানার জন্য পড়তে থাকুন)
২। এটি কিভাবে কাজ করে?
প্রথমেই একটা উদাহরণ দেই । ধরুন আপনার একটা লোকাল টিভি চ্যানেল আছে যেটি আপনার এলাকায় প্রচার হয়ে থাকে । চ্যানেলটির গ্রাহক সংখ্যা লক্ষাধিক । মানে আপনার টিভি চ্যানেল প্রতিদিন প্রায় লক্ষ মানুষ দেখে থাকে । ধরেই নেয়া যায় আপনার টিভি চ্যানেলটি মোটামোটি জনপ্রিয় । ধরুন আমার একটা কাপড়ের দোকান আছে আপনার এলাকায় । এখন আমি চাচ্ছি আমার কাপড়ের দোকান সম্পর্কে আপনার এলাকার সবাই জানুক, সবাই আমার দোকান থেকে কাপড় কিনুক । এজন্য আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করলাম । আপনাকে বললাম, ভাইসাহেব, আমার তো একটা কাপড়ের দোকান আছে । আপনি যদি আপনার টিভি চ্যানেলে আমার দোকানের বিজ্ঞাপন দেন তাহলে আমার দোকান সম্পর্কে লক্ষ মানুষ জানতে পারবে । আমি আপনাকে টাকা দেব বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য । এতে আপনারও আয় হবে, আমারো আয় বাড়বে । আপনি রাজি হয়ে গেলেন এবং আমার দোকানের বিজ্ঞাপন দেখাতে লাগলেন । আমিও আপনাকে টাকা দিতে থাকলাম, এদিকে আমার আয়ও বাড়তে শুরু করল কাপড় বিক্রি করে । (এখানে আমি হলাম বিজ্ঞাপনদাতা এবং আপনি হলেন পাবলিশার ।)
আপনি যদি উপরের ঘটনাটা বুঝতে পারেন তাহলে গুগল এডসেন্সের কাজটিও বুঝতে পারবেন । একজন বিজ্ঞাপনদাতা ঠিক একইভাবে গুগলের কাছে তার পণ্যের বিবরণ (আমার দোকান কোথায় এবং কী কী আছে এতে) এবং বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য টাকা দেন । আর গুগল সেই বিজ্ঞাপন পাবলিশারদের সাইট বা ব্লগে পাবলিশ করে । পাবলিশাররা বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য গুগলের কাছ থেকে বিজ্ঞাপনদাতের দেওয়া টাকার একটা নির্দিষ্ট অংশ পেয়ে থাকেন । (বিজ্ঞাপন দাতাদের দেওয়া টাকার ৭০% পাবলিশাররা পায়, বাকী ৩০% গুগল নিজের জন্য রাখে ।)
এডসেন্স যেভাবে কাজ করে
৩। আমি কি এডসেন্স পেতে পারি? পেলে কিভাবে?
আপনি না শুধু, যে কেউই এডসেন্স পেতে পারে । এজন্য অবশ্য আপনাকে ১৮ বছর বয়স বা তার অধিক হতে হবে কারণ গুগল ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে এডসেন্স দেয়না । (কিন্তু আপনি চাইলে আপনার বাবা বা মায়ের নামে এডসেন্স খুলতে পারবেন । যেমন আমি আমার মায়ের নামে খুলেছি)
এখন কিভাবে পাবেন তা নিয়ে আলোচনা করা যাক । বুঝতেই পারছেন গুগল এডসেন্স পাবলিশার হতে চাইলে আপনার অবশ্যই একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকতে হবে (যেমন উদাহরণে আপনার টিভি চ্যানেল ছিল । আর না থাকলে বিজ্ঞাপন দেখাবেন কোথায়?) । আপনার ব্লগের বয়স, ব্লগের কন্টেন্ট বা পোস্ট, ভিজিটর এবং আরো কিছু ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করবে আপনার গুগল এডসেন্স পাওয়া । (আরেকটা বিষয় জেনে রাখি, কন্টেন্ট হল আপনার ব্লগে যা লেখবেন তাই । টেকটিউনস যদি একটা ব্লগ হয় তাহলে আমার এই পোস্টটি হল একটি কন্টেন্ট ।) আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের কিছু ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে । সেসব যোগ্যতা অর্জন করার পর আপনাকে গুগলের কাছে এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে । তখন গুগল আপনার ব্লগ দেখে পছন্দ করলেই আপনি এডসেন্স পেয়ে যাবেন ।
৪। এডসেন্স পাওয়ার জন্য আমার ব্লগের কী কী যোগ্যতা থাকতে হবে?
এডসেন্স পাওয়ার জন্য আপনার ব্লগের যেসব যোগ্যতা থাকতে হবে আসেন সেগুলো দেখে নিই-
• আপনার ব্লগ অবশ্যই নির্মানাধীন হবেনা । মানে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত একটি ব্লগ হতে হবে ।
• ব্লগের এড্রেস বা ঠিকানা অবশ্যই সাবডোমেইন হবেনা । .com .net .org এর মত টপ লেভেল ডোমেইন হতে হবে । বিষয়টা না বুঝলে উদাহরণটা দেখুন, http://facebook.com হচ্ছে ডোমেইন http://developer.facebook.com হচ্ছে সাবডোমেইন । আপনার ব্লগ blogger.com-এ তৈরি করা হলে ডোমেইনের চিন্তা না করলেও হবে । তবে আপনার ব্লগের একটি নূন্যতম বয়স থাকতে হবে । এই নূন্যতম বয়স না হলে আপনি এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না । অনেকে বলেন, এ বয়স হল ৬ মাস । তবে আমার মতে ২-৩মাসের মধ্যেই আবেদন করা যায় ।
• আপনার ব্লগে অবশ্যই কমপক্ষে ২০টি কন্টেন্ট বা পোস্ট থাকতে হবে । অনেকেই বলেন ৫০টির কথা আবার অনেকে ১০টি । কিন্তু আসলে এটি সঠিক করে বলা যায়না । অনেকে ১০০টি করেও পায়না আবার অনেক ৫টি করেই পায় যার উদাহরণ আমি । আমি নিজে মাত্র ৫টি পোস্ট করে এডসেন্স পেয়েছিলাম । তবে ২০টির কথা বললাম গড় হিসাবে । আপনার ব্লগে কন্টেন্ট সংখ্যা যত বেশি হবে এডসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি হবে ।
• ব্লগের কন্টেন্টগুলো অবশ্যই গুগল সমর্থিত কোনো ভাষায় হতে হবে । গুগল সমর্থিত ভাষাগুলো হল-
যেহেতু দেখতে পারছেন এখানে বাংলা নেই, তাই অবশ্যই বাংল ব্লগে এডসেন্স
পাবেননা । যেহেতু আমরা বাঙালি, তাই মোটামোটি ইংরেজিটাই আমাদের জন্য বেশি
সহজ হবে উপরের ভাষাগুলোর মধ্যে । আপনার ব্লগটাও তাই ইংরেজিতে হতে হবে ।
গ্রামাটিক্যাল মিসটেক এবং বানান ভুলের সংখ্যা যত কম হবে, গুগলও আপনার ব্লগ
তত বেশি পছন্দ করবে এবং আপনার এডসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে ।
• কন্টেন্ট অবশ্যই মানসম্মত এবং ইউনিক হতে হবে । গুগল সবসময়ই ইউনিক কন্টেন্ট পছন্দ করে । কপি-পেস্ট করে ১০টা না, ১০০টা না ১০০০টা পোস্টও যদি আপনি করে ফেলেন তাহলেও গুগল আপনাকে এডসেন্স দেবেনা । যদি ভাবেন ‘আমি কপি করলাম না কি করলাম এটা গুগল জানবে কিভাবে?’ তাহলে আমি বলব, আপনার গুগল সম্পর্কে ধারণা কম । আগে গুগল সম্পর্কে জানুন, তাহলেই এধরণের ভাবনা মাথায় আসবেনা । আপাতত জেনে রাখুন, আপনি কোথা থেকে কী কপি করলেন, কখন করলেন গুগলের সবই জানা আছে । তাই অবশ্যই আপনার ব্লগের লেখাগুলো ইউনিক হতে হবে । পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে এমন কোনো লেখা কোনোভাবেই ব্লগে দেওয়া যাবেনা । এমনকি সেটা যদি আপনারই অন্য কোনো ব্লগে আগে প্রকাশ হয়ে থাকে তাহলেও না ।
• গুগল সার্চ ইঞ্জিন কর্তৃক আপনার ব্লগ ইন্ডেক্স করা থাকতে হবে । (অনেকেই ব্যপারটিকে SEO বললে চিনবেন)
• কিছু ধরণের কন্টেন্ট গুগল পলিসি অনুসারে অবৈধ । যেসব বিষয়ের কন্টেন্ট গুগলের কাছে অবৈধ তা জনতে সরাসরি গুগলের কাছ থেকে জেনে আসুন । কিছু বিষয় এখানে দিলাম ।
1. ড্রাগ সংক্রান্ত ব্লগ
2. গোলাবারুদ বা এমুনিশন সংক্রান্ত ব্লগ
3. এডাল্ট কন্টেন্ট আছে এমন ব্লগ
4. [C R A C K], প্যাচ বা হ্যাক সংক্রান্ত ব্লগ
5. কপিরাইট কন্টেন্ট
এসব ব্লগে এডসেন্স পাওয়া যাবেনা । এমনকি আপনি এডসেন্স পাওয়ার পরও যদি এ সংক্রান্ত কোনো কন্টেন্ট ব্লগে লেখেন, তাহলে গুগল জানা মাত্রই আপনার এডসেন্স একাউন্ট ব্যান করে দেবে ।
আরো কিছু যোগ্যতা আছে যা অনেকেই অপ্রয়োজনীয় মনে করেন । অর্থাৎ যেগুলো নাহলেও চলবে সেগুলো হলঃ
• আপনার ব্লগে মিনিমাম কিছু সংখ্যক হলেও ভিজিটর থাকতে হবে ।
• ব্লগের এলেক্সা র্যা ঙ্ক ৪ লক্ষের নিচে থাকতে হবে ।
মোটামোটিভাবে এসব যোগ্যতা অর্জন করতে পারলেই আপনি এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন । আসলে কথা হল, আপনি যেকোনো সময়ই আবেদন করতে পারেন । কিন্তু দুঃখের বিষয়, যথাযথ যোগ্যতা না থাকলে গুগলের তা পছন্দ হবেনা এবং রিফিউজ করে দিবে ।
৫। এডসেন্স পেতে কত সময় লাগতে পারে?
এই প্রশ্নটির উত্তর আপনিই ভালো দিতে পারবেন যদি আমার আগের কথাগুলো বুঝতে পারেন । উপরোক্ত যোগ্যতা অর্জন করতে আপনার যত সময় লাগবে ঠিক তত সময়ই লাগবে । গুগলে কাছে এডসেন্সের জন্য আবেদন করার পর ৫ থেকে ৭দিন সময় নেয় গুগল । তারপরেই তারা আপনাকে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে আপনার ব্লগ এপ্রোভ হয়েছে কিনা (মানে আপনি এডসেন্স পেয়েছেন কিনা)
৬। এডসেন্স থেকে কিভাবে আমি টাকা পাব?
ধরে নিলাম, আপনি এডসেন্স পেয়েছেন । এডসেন্স ড্যাসবোর্ড থেকে আপনাকে একটা বিজ্ঞাপন কোড (এড কোড) দেওয়া হবে । এই এড কোড আপনি আপনার ব্লগে বসাবেন । কেউ যদি আপনার ব্লগে প্রবেশ করে তাহলে সে আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন বা এড দেখবে (যেখানে আপনি এড কোড বসিয়েছেন) । তারপর যদি সে ঐ বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলে গুগল তাকে ঐ বিজ্ঞাপনের বিজ্ঞাপনদাতার দেওয়া লিঙ্কে (মানে বিজ্ঞাপন্দাতার ওয়েবসাইটে) নিয়ে যাবে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনার এডসেন্স একাউন্টে জমা হবে । প্রতিমাস অন্তর অন্তর আপনি টাকা পাবেন যদি একাউন্টে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১০০ ডলারের উপরে হয় (অর্থাৎ মিনিমাম পে-আউট ১০০ ডলার)। এই টাকা ব্যাঙ্ক চেকের মাধ্যমে গুগল আপনার ঠিকানায় প্রেরণ করবে । স্থানীয় কোনো ব্যাঙ্ক থেকে এই টাকা আপনি তুলে নিতে পারবেন (যেমন ডাচ বাংলা ব্যাঙ্ক ইত্যাদি) । এখানে বলে রাখা ভালো, আপনার ব্লগে গুগল কি ধরণের বিজ্ঞাপন দেখাবে এবং প্রতি ক্লিকের জন্য আপনাকে কি পরিমান টাকা দিবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ব্লগের কিওয়ার্ডের উপর, আপনার লেখা কন্টেন্টের উপর । বিষয়টা নতুনদের জন্য বুঝা মোটামোটি জটিল (আমি নিজেও তেমন বুঝিনা) ।
এডসেন্স থেকে পাওয়া চেক৭। এডসেন্স পাওয়া মানেই কি টাকা আর টাকা?
অধিকাংশ ব্লগাররাই এডসেন্স পাওয়ার পূর্বে এটি ভেবে থাকেন । একসময় আমি নিজেও ভাবতাম । কিন্তু এডসেন্স পাওয়ার পরেই ধারণা পাল্টে যায় । কারন এডসেন্স পাওয়ার পরেও আপনাকে অনেক পরিশ্রম করে যেতে হবে । তা নাহলে এডসেন্স এডসেন্সের মত পড়ে থাকবে । টাকা আর আসবেনা ।
৮। এডসেন্স পাওয়ার পরেও কেন আমাকে পরিশ্রম করতে হবে?
যেহেতু ইতিমধ্যেই ভিজিটর এবং ক্লিকের ব্যপারটা বুঝে গিয়েছেন, তাহলে বুঝতেই পারছেন ভিজিটরের মূল্য কত । আপনার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করবে আপনার ব্লগে কেমন ভিজিটর যায় তার উপর । যদি ভিজিটর বেশি হয় তাহলে বিজ্ঞাপনে ক্লিকও বেশি পড়বে, আপনার আয়ও বেশি হবে । কম ভিজিটর হলে কম আয়, হিসাবটা সাধারণ । আর মূলত আপনাকে পরিশ্রমটা করতে হবে এই ভিজিটর বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই । একজন ভিজিটর যখন কোনোভাবে আপনার ব্লগে এসে পড়ে এবং আপনার ব্লগকে সাহায্যকারী বা হেল্পফুল পায়, তখন পরবর্তিতে সরাসরিই সে আপনার ব্লগে এসে হাজির হয় (যেমনঃ টেকটিউন্স), আর আপনি পেয়ে যান একজন নিয়মিত ভিজিটর । আর আপনার ব্লগকে সবার হেল্পফুল করতেই আপনাকে অনেক পরিশ্রম করে যেতে হবে । ভাবছেন, আমার ক্লিক আমি নিজেই দিব, ভিজিটরের দরকার কি? তাহলে শুনুন, এতদিন এত কাঠখড় পুঁড়িয়ে যে এডসেন্সটা পেলেন, সেই এডসেন্স আপনার নিজের করা একটা ক্লিকে ভ্যানিশ হয়ে যেতে পারে, মানে আপনি ব্যান খেতে পারেন । সুতরাং যদি পরিশ্রম করতে পারেন, তাহলে আপনার আয়ের দিকে অন্যরা ঈর্ষাভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকবে । আর বিপরীত হলে? কোতুকের ভাষায় বলি, আপনার ব্লগের ভিজিটর আপনাকে একাই হতে হবে এবং আপনার মুড়ি খাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবেনা ।
৮। সবই তো বুঝলাম, কিন্তু কন্টেন্ট লিখব কী নিয়ে?
আপনি ভাল জানেন এমন একটি বিষয়কেই আপনার লেখার বিষয়বস্তু বানিয়ে লিখবেন । সেটা ট্রাভেলিং সম্পর্কে হোক, উদ্ভিদ সম্পর্কে হোক, আইন নিয়ে হোক, মেডিক্যাল সাইন্স নিয়ে হোক বা হোক প্রযুক্তি নিয়ে । তবে কি নিয়ে লিখলে আপনার আয় বেশি হবে তা মাথায় রেখে লিখার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করলে ভাল হয় । যেমন, প্রযুক্তি নিয়ে লিখলে আপনার যেরকম আয় হবে, ব্যাঙ্ক বীমা সম্পর্কে লিখলে তা থেকে আপনার আয় বেশি হবে ।
সবশেষে কিছু পরামর্শঃ
ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই দেখতে পারবেন অনেকেই বলছে "I earned $1000 with Google AdSens" । এটি সত্য । কিন্তু এই পজিশনে যারা যেতে পেরেছেন, তাদেরকে অনেক কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হয়েছে । রাতারাতি কেউ যেতে পারেননি । এই ইংরেজি লাইনটুকু পড়ে অনেক নতুনই উদ্দীপিত হবেন । এডসেন্সের প্রতি আগ্রহ বহুগুন বেড়ে যাবে সেকেন্ডেই । কিন্তু সফল হবে তারাই, যাদের এই আগ্রহ শেষ পর্যন্ত থেকে যাবে । সফল হওয়ার পূর্বশর্ত পরিশ্রম । যদি পরিশ্রমী হতে পারেন, যদি শতবার ব্যর্থ হওয়ার পরও দমে না যান তবে এডসেন্স পাবলিশার হওয়ার স্বপ্ন দেখুন ।
কনটেন্ট লিখবার মত জ্ঞান না থাকলে আগে জ্ঞানার্জন করুন । আপনার আগ্রহের কোনো বিষয় নিয়ে জ্ঞানার্জন করুন । তারপর এডসেন্স-এর জন্য লেগে পড়ুন, অবশ্যই পারবেন । ব্লগিং করে টাকা আয় করা যায়, এটা যত বড় সুবিধা, ব্লগিং-এর মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা যায় এটা তার চেয়েও বড় সুবিধা । কিন্তু জ্ঞানের দাম আমাদের কাছে নগদ টাকার চেয়ে কম বিধায় তা আমরা বুঝতে পারিনা ।
আপনি যদি ছাত্র হউন, তবে অবশ্যই আপনার পড়ালেখা ঠিক রেখে ব্লগিং করবেন । কেননা গুগল আপনাকে মাসে মাসে টাকা দিতে পারবে হয়ত, ব্যারিষ্টার-ইঞ্জিনিয়ার বানাতে পারবেনা । (যেহেতু আমাদের প্রায় সবারই জীবনের লক্ষ্য এডসেন্স পাবলিশার হওয়া নয়)
এই ছিল আমার নতুনদের জন্য এডসেন্স বিষয়ক পোস্ট । নতুনদের জন্য বিধায় জটিলতা পরিহার করা হয়েছে । চেষ্টা করেছি মোটামোটি সবকিছুরই প্রাথমিক ধারণা দিতে । তবু যদি কোনো কিছু বেড়িয়ে যায় কিংবা কারো কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে বলতে পারেন । যথাসাধ্য চেষ্টা করব উত্তর দিতে ।
এটি আমার প্রথম টিউন । ভুল ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি ।
সকলকে ধন্যবাদ ।
ব্লগিং করি অথচ গুগল এডসেন্সকে চিনিনা এমন লোক খুব কমই আছে । কিন্তু যারা ব্লগিং-এ নতুন তাদের জন্য এটি না চেনাই স্বাভাবিক । আবার অনেকে গুগল এডসেন্সের জন্যই ব্লগিং করেন । তো যাই হোক, আমার এই পোস্ট গুগল এডসেন্স নিয়ে এবং যারা এটি একেবারেই চিনেননা তাদের জন্য । অল্প কথায় সহজে বুঝতে চাইলে মনযোগ সহকারে পড়ুনঃ
১। গুগল এডসেন্স কী?
গুগল এডসেন্সবিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল এর একটি সেবা হল এডসেন্স । এই সেবাটির মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা টাকার বিনিময়ে তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন এবং পাবলিশাররা বিজ্ঞাপনদাতাদের বিজ্ঞাপন নিজ নিজ ব্লগ বা ওয়েবসাইটে দেখিয়ে টাকা উপার্জন করে থাকেন । (বিজ্ঞাপনদাতা এবং পাবলিশার কী বা কারা জানার জন্য পড়তে থাকুন)
২। এটি কিভাবে কাজ করে?
প্রথমেই একটা উদাহরণ দেই । ধরুন আপনার একটা লোকাল টিভি চ্যানেল আছে যেটি আপনার এলাকায় প্রচার হয়ে থাকে । চ্যানেলটির গ্রাহক সংখ্যা লক্ষাধিক । মানে আপনার টিভি চ্যানেল প্রতিদিন প্রায় লক্ষ মানুষ দেখে থাকে । ধরেই নেয়া যায় আপনার টিভি চ্যানেলটি মোটামোটি জনপ্রিয় । ধরুন আমার একটা কাপড়ের দোকান আছে আপনার এলাকায় । এখন আমি চাচ্ছি আমার কাপড়ের দোকান সম্পর্কে আপনার এলাকার সবাই জানুক, সবাই আমার দোকান থেকে কাপড় কিনুক । এজন্য আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করলাম । আপনাকে বললাম, ভাইসাহেব, আমার তো একটা কাপড়ের দোকান আছে । আপনি যদি আপনার টিভি চ্যানেলে আমার দোকানের বিজ্ঞাপন দেন তাহলে আমার দোকান সম্পর্কে লক্ষ মানুষ জানতে পারবে । আমি আপনাকে টাকা দেব বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য । এতে আপনারও আয় হবে, আমারো আয় বাড়বে । আপনি রাজি হয়ে গেলেন এবং আমার দোকানের বিজ্ঞাপন দেখাতে লাগলেন । আমিও আপনাকে টাকা দিতে থাকলাম, এদিকে আমার আয়ও বাড়তে শুরু করল কাপড় বিক্রি করে । (এখানে আমি হলাম বিজ্ঞাপনদাতা এবং আপনি হলেন পাবলিশার ।)
আপনি যদি উপরের ঘটনাটা বুঝতে পারেন তাহলে গুগল এডসেন্সের কাজটিও বুঝতে পারবেন । একজন বিজ্ঞাপনদাতা ঠিক একইভাবে গুগলের কাছে তার পণ্যের বিবরণ (আমার দোকান কোথায় এবং কী কী আছে এতে) এবং বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য টাকা দেন । আর গুগল সেই বিজ্ঞাপন পাবলিশারদের সাইট বা ব্লগে পাবলিশ করে । পাবলিশাররা বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য গুগলের কাছ থেকে বিজ্ঞাপনদাতের দেওয়া টাকার একটা নির্দিষ্ট অংশ পেয়ে থাকেন । (বিজ্ঞাপন দাতাদের দেওয়া টাকার ৭০% পাবলিশাররা পায়, বাকী ৩০% গুগল নিজের জন্য রাখে ।)
এডসেন্স যেভাবে কাজ করে
৩। আমি কি এডসেন্স পেতে পারি? পেলে কিভাবে?
আপনি না শুধু, যে কেউই এডসেন্স পেতে পারে । এজন্য অবশ্য আপনাকে ১৮ বছর বয়স বা তার অধিক হতে হবে কারণ গুগল ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে এডসেন্স দেয়না । (কিন্তু আপনি চাইলে আপনার বাবা বা মায়ের নামে এডসেন্স খুলতে পারবেন । যেমন আমি আমার মায়ের নামে খুলেছি)
এখন কিভাবে পাবেন তা নিয়ে আলোচনা করা যাক । বুঝতেই পারছেন গুগল এডসেন্স পাবলিশার হতে চাইলে আপনার অবশ্যই একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকতে হবে (যেমন উদাহরণে আপনার টিভি চ্যানেল ছিল । আর না থাকলে বিজ্ঞাপন দেখাবেন কোথায়?) । আপনার ব্লগের বয়স, ব্লগের কন্টেন্ট বা পোস্ট, ভিজিটর এবং আরো কিছু ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করবে আপনার গুগল এডসেন্স পাওয়া । (আরেকটা বিষয় জেনে রাখি, কন্টেন্ট হল আপনার ব্লগে যা লেখবেন তাই । টেকটিউনস যদি একটা ব্লগ হয় তাহলে আমার এই পোস্টটি হল একটি কন্টেন্ট ।) আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের কিছু ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে । সেসব যোগ্যতা অর্জন করার পর আপনাকে গুগলের কাছে এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে । তখন গুগল আপনার ব্লগ দেখে পছন্দ করলেই আপনি এডসেন্স পেয়ে যাবেন ।
৪। এডসেন্স পাওয়ার জন্য আমার ব্লগের কী কী যোগ্যতা থাকতে হবে?
এডসেন্স পাওয়ার জন্য আপনার ব্লগের যেসব যোগ্যতা থাকতে হবে আসেন সেগুলো দেখে নিই-
• আপনার ব্লগ অবশ্যই নির্মানাধীন হবেনা । মানে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত একটি ব্লগ হতে হবে ।
• ব্লগের এড্রেস বা ঠিকানা অবশ্যই সাবডোমেইন হবেনা । .com .net .org এর মত টপ লেভেল ডোমেইন হতে হবে । বিষয়টা না বুঝলে উদাহরণটা দেখুন, http://facebook.com হচ্ছে ডোমেইন http://developer.facebook.com হচ্ছে সাবডোমেইন । আপনার ব্লগ blogger.com-এ তৈরি করা হলে ডোমেইনের চিন্তা না করলেও হবে । তবে আপনার ব্লগের একটি নূন্যতম বয়স থাকতে হবে । এই নূন্যতম বয়স না হলে আপনি এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না । অনেকে বলেন, এ বয়স হল ৬ মাস । তবে আমার মতে ২-৩মাসের মধ্যেই আবেদন করা যায় ।
• আপনার ব্লগে অবশ্যই কমপক্ষে ২০টি কন্টেন্ট বা পোস্ট থাকতে হবে । অনেকেই বলেন ৫০টির কথা আবার অনেকে ১০টি । কিন্তু আসলে এটি সঠিক করে বলা যায়না । অনেকে ১০০টি করেও পায়না আবার অনেক ৫টি করেই পায় যার উদাহরণ আমি । আমি নিজে মাত্র ৫টি পোস্ট করে এডসেন্স পেয়েছিলাম । তবে ২০টির কথা বললাম গড় হিসাবে । আপনার ব্লগে কন্টেন্ট সংখ্যা যত বেশি হবে এডসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি হবে ।
• ব্লগের কন্টেন্টগুলো অবশ্যই গুগল সমর্থিত কোনো ভাষায় হতে হবে । গুগল সমর্থিত ভাষাগুলো হল-
Arabic | Greek | Portuguese |
Bulgarian | Hebrew | Romanian |
Chinese (simplified) | Hindi | Russian |
Chinese (traditional) | Hungarian | Serbian |
Croatian | Indonesian | Slovak |
Czech | Italian | Slovenian * |
Danish | Japanese | Spanish |
Dutch | Korean | Swedish |
English | Latvian | Thai |
Estonian * | Lithuanian | Turkish |
Finnish | Malay | Ukrainian |
French | Norwegian | Vietnamese |
German | Polish |
• কন্টেন্ট অবশ্যই মানসম্মত এবং ইউনিক হতে হবে । গুগল সবসময়ই ইউনিক কন্টেন্ট পছন্দ করে । কপি-পেস্ট করে ১০টা না, ১০০টা না ১০০০টা পোস্টও যদি আপনি করে ফেলেন তাহলেও গুগল আপনাকে এডসেন্স দেবেনা । যদি ভাবেন ‘আমি কপি করলাম না কি করলাম এটা গুগল জানবে কিভাবে?’ তাহলে আমি বলব, আপনার গুগল সম্পর্কে ধারণা কম । আগে গুগল সম্পর্কে জানুন, তাহলেই এধরণের ভাবনা মাথায় আসবেনা । আপাতত জেনে রাখুন, আপনি কোথা থেকে কী কপি করলেন, কখন করলেন গুগলের সবই জানা আছে । তাই অবশ্যই আপনার ব্লগের লেখাগুলো ইউনিক হতে হবে । পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে এমন কোনো লেখা কোনোভাবেই ব্লগে দেওয়া যাবেনা । এমনকি সেটা যদি আপনারই অন্য কোনো ব্লগে আগে প্রকাশ হয়ে থাকে তাহলেও না ।
• গুগল সার্চ ইঞ্জিন কর্তৃক আপনার ব্লগ ইন্ডেক্স করা থাকতে হবে । (অনেকেই ব্যপারটিকে SEO বললে চিনবেন)
• কিছু ধরণের কন্টেন্ট গুগল পলিসি অনুসারে অবৈধ । যেসব বিষয়ের কন্টেন্ট গুগলের কাছে অবৈধ তা জনতে সরাসরি গুগলের কাছ থেকে জেনে আসুন । কিছু বিষয় এখানে দিলাম ।
1. ড্রাগ সংক্রান্ত ব্লগ
2. গোলাবারুদ বা এমুনিশন সংক্রান্ত ব্লগ
3. এডাল্ট কন্টেন্ট আছে এমন ব্লগ
4. [C R A C K], প্যাচ বা হ্যাক সংক্রান্ত ব্লগ
5. কপিরাইট কন্টেন্ট
এসব ব্লগে এডসেন্স পাওয়া যাবেনা । এমনকি আপনি এডসেন্স পাওয়ার পরও যদি এ সংক্রান্ত কোনো কন্টেন্ট ব্লগে লেখেন, তাহলে গুগল জানা মাত্রই আপনার এডসেন্স একাউন্ট ব্যান করে দেবে ।
আরো কিছু যোগ্যতা আছে যা অনেকেই অপ্রয়োজনীয় মনে করেন । অর্থাৎ যেগুলো নাহলেও চলবে সেগুলো হলঃ
• আপনার ব্লগে মিনিমাম কিছু সংখ্যক হলেও ভিজিটর থাকতে হবে ।
• ব্লগের এলেক্সা র্যা ঙ্ক ৪ লক্ষের নিচে থাকতে হবে ।
মোটামোটিভাবে এসব যোগ্যতা অর্জন করতে পারলেই আপনি এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন । আসলে কথা হল, আপনি যেকোনো সময়ই আবেদন করতে পারেন । কিন্তু দুঃখের বিষয়, যথাযথ যোগ্যতা না থাকলে গুগলের তা পছন্দ হবেনা এবং রিফিউজ করে দিবে ।
৫। এডসেন্স পেতে কত সময় লাগতে পারে?
এই প্রশ্নটির উত্তর আপনিই ভালো দিতে পারবেন যদি আমার আগের কথাগুলো বুঝতে পারেন । উপরোক্ত যোগ্যতা অর্জন করতে আপনার যত সময় লাগবে ঠিক তত সময়ই লাগবে । গুগলে কাছে এডসেন্সের জন্য আবেদন করার পর ৫ থেকে ৭দিন সময় নেয় গুগল । তারপরেই তারা আপনাকে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে আপনার ব্লগ এপ্রোভ হয়েছে কিনা (মানে আপনি এডসেন্স পেয়েছেন কিনা)
৬। এডসেন্স থেকে কিভাবে আমি টাকা পাব?
ধরে নিলাম, আপনি এডসেন্স পেয়েছেন । এডসেন্স ড্যাসবোর্ড থেকে আপনাকে একটা বিজ্ঞাপন কোড (এড কোড) দেওয়া হবে । এই এড কোড আপনি আপনার ব্লগে বসাবেন । কেউ যদি আপনার ব্লগে প্রবেশ করে তাহলে সে আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন বা এড দেখবে (যেখানে আপনি এড কোড বসিয়েছেন) । তারপর যদি সে ঐ বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলে গুগল তাকে ঐ বিজ্ঞাপনের বিজ্ঞাপনদাতার দেওয়া লিঙ্কে (মানে বিজ্ঞাপন্দাতার ওয়েবসাইটে) নিয়ে যাবে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনার এডসেন্স একাউন্টে জমা হবে । প্রতিমাস অন্তর অন্তর আপনি টাকা পাবেন যদি একাউন্টে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১০০ ডলারের উপরে হয় (অর্থাৎ মিনিমাম পে-আউট ১০০ ডলার)। এই টাকা ব্যাঙ্ক চেকের মাধ্যমে গুগল আপনার ঠিকানায় প্রেরণ করবে । স্থানীয় কোনো ব্যাঙ্ক থেকে এই টাকা আপনি তুলে নিতে পারবেন (যেমন ডাচ বাংলা ব্যাঙ্ক ইত্যাদি) । এখানে বলে রাখা ভালো, আপনার ব্লগে গুগল কি ধরণের বিজ্ঞাপন দেখাবে এবং প্রতি ক্লিকের জন্য আপনাকে কি পরিমান টাকা দিবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ব্লগের কিওয়ার্ডের উপর, আপনার লেখা কন্টেন্টের উপর । বিষয়টা নতুনদের জন্য বুঝা মোটামোটি জটিল (আমি নিজেও তেমন বুঝিনা) ।
এডসেন্স থেকে পাওয়া চেক৭। এডসেন্স পাওয়া মানেই কি টাকা আর টাকা?
অধিকাংশ ব্লগাররাই এডসেন্স পাওয়ার পূর্বে এটি ভেবে থাকেন । একসময় আমি নিজেও ভাবতাম । কিন্তু এডসেন্স পাওয়ার পরেই ধারণা পাল্টে যায় । কারন এডসেন্স পাওয়ার পরেও আপনাকে অনেক পরিশ্রম করে যেতে হবে । তা নাহলে এডসেন্স এডসেন্সের মত পড়ে থাকবে । টাকা আর আসবেনা ।
৮। এডসেন্স পাওয়ার পরেও কেন আমাকে পরিশ্রম করতে হবে?
যেহেতু ইতিমধ্যেই ভিজিটর এবং ক্লিকের ব্যপারটা বুঝে গিয়েছেন, তাহলে বুঝতেই পারছেন ভিজিটরের মূল্য কত । আপনার আয়ের পরিমাণ নির্ভর করবে আপনার ব্লগে কেমন ভিজিটর যায় তার উপর । যদি ভিজিটর বেশি হয় তাহলে বিজ্ঞাপনে ক্লিকও বেশি পড়বে, আপনার আয়ও বেশি হবে । কম ভিজিটর হলে কম আয়, হিসাবটা সাধারণ । আর মূলত আপনাকে পরিশ্রমটা করতে হবে এই ভিজিটর বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই । একজন ভিজিটর যখন কোনোভাবে আপনার ব্লগে এসে পড়ে এবং আপনার ব্লগকে সাহায্যকারী বা হেল্পফুল পায়, তখন পরবর্তিতে সরাসরিই সে আপনার ব্লগে এসে হাজির হয় (যেমনঃ টেকটিউন্স), আর আপনি পেয়ে যান একজন নিয়মিত ভিজিটর । আর আপনার ব্লগকে সবার হেল্পফুল করতেই আপনাকে অনেক পরিশ্রম করে যেতে হবে । ভাবছেন, আমার ক্লিক আমি নিজেই দিব, ভিজিটরের দরকার কি? তাহলে শুনুন, এতদিন এত কাঠখড় পুঁড়িয়ে যে এডসেন্সটা পেলেন, সেই এডসেন্স আপনার নিজের করা একটা ক্লিকে ভ্যানিশ হয়ে যেতে পারে, মানে আপনি ব্যান খেতে পারেন । সুতরাং যদি পরিশ্রম করতে পারেন, তাহলে আপনার আয়ের দিকে অন্যরা ঈর্ষাভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকবে । আর বিপরীত হলে? কোতুকের ভাষায় বলি, আপনার ব্লগের ভিজিটর আপনাকে একাই হতে হবে এবং আপনার মুড়ি খাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবেনা ।
৮। সবই তো বুঝলাম, কিন্তু কন্টেন্ট লিখব কী নিয়ে?
আপনি ভাল জানেন এমন একটি বিষয়কেই আপনার লেখার বিষয়বস্তু বানিয়ে লিখবেন । সেটা ট্রাভেলিং সম্পর্কে হোক, উদ্ভিদ সম্পর্কে হোক, আইন নিয়ে হোক, মেডিক্যাল সাইন্স নিয়ে হোক বা হোক প্রযুক্তি নিয়ে । তবে কি নিয়ে লিখলে আপনার আয় বেশি হবে তা মাথায় রেখে লিখার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করলে ভাল হয় । যেমন, প্রযুক্তি নিয়ে লিখলে আপনার যেরকম আয় হবে, ব্যাঙ্ক বীমা সম্পর্কে লিখলে তা থেকে আপনার আয় বেশি হবে ।
সবশেষে কিছু পরামর্শঃ
ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই দেখতে পারবেন অনেকেই বলছে "I earned $1000 with Google AdSens" । এটি সত্য । কিন্তু এই পজিশনে যারা যেতে পেরেছেন, তাদেরকে অনেক কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হয়েছে । রাতারাতি কেউ যেতে পারেননি । এই ইংরেজি লাইনটুকু পড়ে অনেক নতুনই উদ্দীপিত হবেন । এডসেন্সের প্রতি আগ্রহ বহুগুন বেড়ে যাবে সেকেন্ডেই । কিন্তু সফল হবে তারাই, যাদের এই আগ্রহ শেষ পর্যন্ত থেকে যাবে । সফল হওয়ার পূর্বশর্ত পরিশ্রম । যদি পরিশ্রমী হতে পারেন, যদি শতবার ব্যর্থ হওয়ার পরও দমে না যান তবে এডসেন্স পাবলিশার হওয়ার স্বপ্ন দেখুন ।
কনটেন্ট লিখবার মত জ্ঞান না থাকলে আগে জ্ঞানার্জন করুন । আপনার আগ্রহের কোনো বিষয় নিয়ে জ্ঞানার্জন করুন । তারপর এডসেন্স-এর জন্য লেগে পড়ুন, অবশ্যই পারবেন । ব্লগিং করে টাকা আয় করা যায়, এটা যত বড় সুবিধা, ব্লগিং-এর মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা যায় এটা তার চেয়েও বড় সুবিধা । কিন্তু জ্ঞানের দাম আমাদের কাছে নগদ টাকার চেয়ে কম বিধায় তা আমরা বুঝতে পারিনা ।
আপনি যদি ছাত্র হউন, তবে অবশ্যই আপনার পড়ালেখা ঠিক রেখে ব্লগিং করবেন । কেননা গুগল আপনাকে মাসে মাসে টাকা দিতে পারবে হয়ত, ব্যারিষ্টার-ইঞ্জিনিয়ার বানাতে পারবেনা । (যেহেতু আমাদের প্রায় সবারই জীবনের লক্ষ্য এডসেন্স পাবলিশার হওয়া নয়)
এই ছিল আমার নতুনদের জন্য এডসেন্স বিষয়ক পোস্ট । নতুনদের জন্য বিধায় জটিলতা পরিহার করা হয়েছে । চেষ্টা করেছি মোটামোটি সবকিছুরই প্রাথমিক ধারণা দিতে । তবু যদি কোনো কিছু বেড়িয়ে যায় কিংবা কারো কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে বলতে পারেন । যথাসাধ্য চেষ্টা করব উত্তর দিতে ।
এটি আমার প্রথম টিউন । ভুল ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি ।
সকলকে ধন্যবাদ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন